আজ || মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪
শিরোনাম :
  তালায় বিশ্ব মা দিবসে স্বপ্নজয়ী মায়েদের সম্মাননা       সাতক্ষীরায় দৈনিক আমার সংবাদের প্রতিনিধিদের মতবিনিময়       তালায় কাপ পিরিচ প্রতীকের শোভাযাত্রা       তালার মাগুরা কাপপিরিচ প্রতীকের নির্বাচনী অফিস উদ্বোধন       ধানদিয়ায় কাপ পিরিচ প্রতীকের পক্ষে প্রভাষক প্রণব ঘোষ বাবলুর গণসংযোগ       খেশরায় কাপ পিরিচে ভোট চেয়ে ঘোষ সনৎ কুমারের গণসংযোগ       খলিলনগরে কাপ পিরিচ প্রতীকের পক্ষে প্রভাষক প্রণব ঘোষ বাবলুর গণসংযোগ       তালার খলিষখালীতে কাপপিরিচ প্রতীকের নির্বাচনী অফিস উদ্বোধন       জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সাথে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস ভিত্তিক অবহিতকরণ সভা       তালায় কাপ পিরিচ প্রতীকের শোডাউন    
 


সাতক্ষীরায় ট্রাকপ্রতি আম মাত্র দেড় হাজার টাকা!

তালা উপজেলাসহ উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরায় দীর্ঘ সময় ধরে তাণ্ডব চালিয়েছে ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’। ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে গোটা জেলা ধ্বংসস্তুপে পরিণত হওয়ার পাশাপাশি সবজি, ধান ও আমসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে আম চাষিদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঝরে পড়া আম ট্রাকপ্রতি ১ থেকে দেড় হাজার টাকাতেও বিক্রি করতে পারছেন না কেউ কেউ।
সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানিয়েছে, আম সংগ্রহের আগে ঝড় হওয়ায় চাষিরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ল্যাংড়া, হিমসাগর ও আম্রপালী আম কোথাও ৮০ ভাগ কোথাও ৯০ ভাগ এবং কোথাও শতভাগ ঝরে পড়েছে। সবমোট ৮৩ ভাগ আমের ক্ষতি নির্ধারণ করা হয়েছে।
সূত্রটি আরও জানায়, চলতি মৌসুমে জেলার সাতটি উপজেলায় চার হাজার ১১৫ হেক্টর জমিতে ৫ হাজার ২৯৯টি আম বাগানে আম চাষ হচ্ছে। ১৩ হাজার ৯৯ জন চাষি আম উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত। এছাড়া ব্যক্তি পর্যায়ে আরও কয়েক হাজার আম চাষি রয়েছেন। চলতি মৌসুমে জেলায় আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৪০ হাজার মেট্রিক টন। মে মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে আম পাড়া শুরু হওয়ার কথা ছিল।
তালা উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে তালা উপজেলায় ৭১৫ হেক্টর জমির ১ হাজার ৪৭৫টি বাগানে ৭ হাজার ৭০ মেট্রিক টন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়।
গত সপ্তাহে সাতক্ষীরায় কালবৈশাখী ঝড়ে আমের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ে পড়া সেই কাঁচা আম ৫ থেকে ১৫ টাকা পাইকারি দরে বিক্রি হয়েছে। করোনা প্রকোপ ও আম্পান আমের চূড়ান্ত ক্ষতি করেছে বলে দাবি করছেন আম চাষিরা।
তালা উপজেলার নাংলা গ্রামের আম চাষী মোঃ শাহীনুর রহমান ও সদরের আব্দুল গণি বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্পানে সব শেষ হয়ে গেছে। পড়া আম কেউ নিতে চাচ্ছে না। যেখানে এক মণ আম ১৫শ’ টাকা বিক্রি হওয়ার কথা সেখানে এক ট্রাক আম এক থেকে দেড় হাজার টাকা দিয়ে একজন নিয়ে চলে গেছেন। এ সময় তারা সরকারি সহায়তা দাবি করেন।
সাতক্ষীরা এলাকার বিপ্লব দাশ নামের এক আম চাষী জানান, কয়েক লাখ টাকা ঋণ নিয়ে ১২টি বাগান কিনেছিলেন তিনি। সব বাগানের আম ঝরে পড়েছে এক রাতের ঝড়ে। আমের পরিচর্যা বাবদ আরও ৫ লাখ টাকা ব্যয় করেছেন। ঋণ শোধের চিন্তা নিয়ে দিশেহারা তিনি।
তালার সুজনশাহ গ্রামের বুদ্ধদেব দত্তর বলেন, ‘বুধবার রাতের ঝড়ে গাছের আম সব ঝরে গেছে। ২ থেকে ৩ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। ঝরে পড়া আমের কোনো ক্রেতাও নেই। এসব আম কি করব বুঝতে পারছি না। আম বিক্রির টাকাতেই আমাদের বছরের সংসারের খরচ চলে।’ তিনি বলেন, ‘কয়েকদিন আগে লিচু গাছের জন্য এক ব্যবসায়ী ৫০ হাজার টাকা দাম বলেছিল কিন্তু বিক্রি করিনি। ভেবেছিলাম আরও বেশি দামে লিচু গাছটি বিক্রি করব। তবে ঝড়ে আম ও লিচু দুটোরই ক্ষতি হয়ে গেল। একটি ঘরও ধ্বসে পড়েছে।’
জাহাঙ্গীর হোসেন নামরে আরেক আম চাষি ঘোষ বলেন, ‘আমার ৫/৬ বিঘার আম বাগানের একটি গাছেও আম নেই। খরচও হয়েছে অনেক। করোনার পর ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতে তছনছ হয়ে সব।’
তালা উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্পান সাতক্ষীরার কৃষিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আম চাষিরা। লাখ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে তারা আম চাষে নেমেছিলেন। তাদের অধিকাংশ আম পড়ে গেছে। ৮৩ ভাগ আমের ক্ষতি নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে চাষীরা কিছুটা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে।


Top