আজ || মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪
শিরোনাম :
 


করোনা সংকটের মধ্যে কিস্তির যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ এনজিওর ক্ষুদ্র ঋণের গ্রাহকেরা

করোনা সংকটের মধ্যেও এনজিও কর্মীরা ঘরে বসে নেই গ্রাহকদের ক্ষুদ্র ঋণের কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে চাপ প্রয়োগ করছে ।

গত ২২ মার্চ এনজিও’র ঋণ শ্রেণিকরণ আগামী জুন পর্যন্ত প্রযোজ্য হবে না বলে নির্দেশনা জারি করেছে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি (এমআরএ) এবং ছয় মাসের জন্য এনজিও ঋণ কিস্তি শিথিল করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি । কিন্তু তা কার্যকর হচ্ছে না । ঋণ গ্রহীতাদের অভিযোগ এনজিও ও স্থানীয় সমিতির কর্মীরা গ্রাহকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে কিস্তি পরিশোধ করার জন্য চাপ প্রয়োগ করছে ।

এক দিকে কাজ নেই, অন্য দিকে এনজিও’র কিস্তি পরিশোধের চাপ । এ নিয়ে অনেকটা কষ্টের মধ্যে দিন পার করছেন  ঋণ গ্রহীতারা ।

এ দিকে সূত্র জানিয়েছে, উন্নয়ন ও মানবিক সেবা এবং কল্যাণের নাম ভাঙ্গিয়ে গড়ে ওঠা এনজিওগুলোর মাঠকর্মীরা নীতি, নৈতিকতা ও বিবেক বিসর্জন দিয়ে কিস্তি আদায়ে মরিয়া হয়ে উঠেছে । এই পরিস্থিতিতে এনজিওগুলো বিপদাপন্ন মানুষের কাছ থেকে ক্ষুদ্র ঋণের কিস্তি আদায় করা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় বলে মনে করছেন সচেতন মহল ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এফআইবিডিবি, ব্রাক, ঢাকা মার্কেন্টাইল ব্যাংক, আশা, গ্রামীণ ব্যাংক, ব্যুরো বাংলাদেশ, টিএমএসএস সহ স্থানীয় কিছু সমবায় সমিতি ও ঋণদান প্রতিষ্ঠান প্রতিনিয়ত কিস্তির টাকা আদায় করার জন্য গ্রাহকদের চাঁপ দিচ্ছে । বাড়ি বাড়ি গিয়ে টাকার জন্য বসে থাকে ।

ফরিদা নামের  এক গ্রাহক বলেন, আশার কর্মীরা কিস্তি নিতে আসলে তিনি সরকারের সিদ্ধান্তের কথা বললে তারা বলে, সরকার নাকি তাদের অনুমতি দিয়েছে ।  নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যবসায়ী  বলেন, ঢাকা মার্কেন্টাইল ব্যাংকের কর্মীরা কিস্তি আদায় করার জন্য বার বার চাপ প্রয়োগ করছে ।

একাধিক দিন বলার পরেও তারা দোকানে এসে বসে থাকেন । তবে ঢাকা মার্কেন্টাইল ব্যাংক পাইকগাছা শাখার ইনভেষ্টম্যান অফিসার  বলেন, পুরাতন কিস্তির জন্য আমরা চাপ প্রয়োগ করব না । তবে কেউ নতুন করে ঋণ নিতে হলে পুরাতন কিস্তি আদায় করতে হবে ।

দেশে করোনা ভাইরাস আতঙ্কের সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়র চলেছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা । প্রাণঘাতী এ ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে রাতদিন মাঠে কাজ করছেন জেলা, উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা ।

এ পরিস্থিতিতে অনেকেই যখন বাড়িতে থাকার কথা চিন্তা করছে, ঠিক তখনই ক্ষুদ্র ঋণের কিস্তির চিন্তা চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে দরিদ্র মানুষের মাথায়। এসব দরিদ্র মানুষের কাছে করোনার পাশাপাশি আরেক আতঙ্কের নাম কিস্তি ।

তালা এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক যুবক সহ  একাধিক ঋণগ্রহীতারা জানান, সকাল হলেই গ্রামীণ ব্যাংক ও টিএমএসএস এর কর্মীরা বাড়িতে এসে বসে থাকে ।

এক দিকে করোনা আতংকিত হয়ে কাজ না থাকায় অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটছে তাদের । এরপরও এনজিওগুলো তাদের কোনো সাহায্য সহযোগিতা না করে উল্টো কিস্তির জন্য চাপ দিচ্ছে ।

 উপজেলা প্রশাসনের এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আগামী ৩০ শে জুন পর্যন্ত কোনো এনজিও কাউকে কিস্তি প্রদানে জোর করতে পারবেনা তবে যদি কোনো গ্রাহক চায় তাহলে এনজিও কিস্তি পরিশোধ করতে পারে ।


Top